বন্যা-পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রোগ
বন্যা-পরবর্তী বিভিন্ন রোগ
ডায়রিয়া
বন্যার সময় বিশুদ্ধ পানির অভাব এবং পচাবাসি খাবার ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটায়। ডায়রিয়া বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এক ধরনের প্রাণঘাতী রোগ। তীব্র পানিশূন্যতার সময় রোগীকে খাবার স্যালাইন এবং শিরাপথে স্যালাইন দেওয়ার ব্যবস্থা করা না গেলে প্রাণহানি ঘটতে পারে।
কলেরা
কলেরা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমিত আরেকটি প্রাণঘাতী রোগ, যার কারণে শরীরে তীব্র পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। এ রোগও দূষিত পানি ও পচাবাসি খাদ্যের মাধ্যমে ছড়ায়। কলেরার কারণে তীব্র ডায়রিয়া ও বমি হয়, যা দ্রুত চিকিৎসা না করলে জীবন সংকটাপন্ন হতে পারে।
হেপাটাইটিস এ ও ই ভাইরাস সংক্রমিত জন্ডিস
দূষিত পানির মাধ্যমে এ ভাইরাসগুলো শরীরে প্রবেশ করে যকৃৎ বা লিভারকে আক্রান্ত করে। এ রোগগুলো তীব্র মাত্রার প্রাণঘাতী না হলেও রোগের কারণে শরীর ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়ে।
টাইফয়েড
টাইফয়েডের জীবাণু সাধারণত দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। টাইফয়েড জ্বরে দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, মাথাব্যথা এবং পেটের পীড়ার সংক্রমণ ঘটে।
জিয়ারডিয়াসিস
বন্যার সময় পানিবাহিত এ রোগটির সংক্রমণের ফলে পেটের পীড়াসহ আমাশয় দেখা দিতে পারে।
ত্বকের সংক্রমণ ও চর্মরোগ
বন্যার পানিতে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করার কারণে ত্বকে নানা ধরনের রোগ সংক্রমণ হতে পারে।
খোসপাঁচড়া, পায়ে ফোসকা পড়া এবং ফাংগাল ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।
শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা
বন্যার পানিতে ভেজা ও ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি এবং অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে। শিশুর মধ্যে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিওলাইটিসের প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে পারে।
মশাবাহিত রোগ
বন্যার পর পানি জমে থাকা জায়গাগুলোয় মশার বংশবৃদ্ধি হয়, যা ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটাতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা
বন্যায় ঘরবাড়ি হারানো, খাদ্য ও পানির সংকট এবং রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণে মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও হতাশা দেখা দিতে পারে। এ মানসিক সমস্যাগুলো অনেক সময় দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, যদি তা সময়মতো মোকাবিলা না করা হয়।